Thursday, October 29, 2015

হারিয়েই যায় - Lost

Edmonton, 29-Oct-2015 2:36 AM 

রেখে গেল কত কিছু নীরবতার মাঝে,
সাঁঝবাতি, সকাল, এখনো তারা সাজে ?
ঝরে যায় অভিমান, মুঠো ভরা রাগ,
নেই কোন পিছুটান, নেই সংরাগ !
দেখেছিলাম কখনো দূর নদী পারে,
মাঝিরা সব কাজ সেরে, শেষে ঘরে ফেরে। 
যাযাবরের ঘর নেই, নেই কোনো তাড়া,
সে তাই জানেনা, কবে হবে ফেরা !
তার কথা হয়ত বা কারো মনে পড়ে,
কোনো রাতে তাকে নিয়ে লেখাপড়া করে। 
সকাল হতেই সে ব্যস্ততায় মাতে,
যাযাবর ঠাই নেয়, লুকনো পাতাতে ।
কোনদিন সেই খাতা হারিয়েই যায়,
যাযাবর ঘরে ফিরেও, ঘর নাহি পায় ।

Wednesday, October 21, 2015

তুই - You

Edmonton, 22-Oct-2015 12:04 AM 

প্রযুক্তির যুগের এই বোধ হয় প্রাপ্তি -
মনোযোগ দিয়ে বসে থাকা,
শুধু অপেক্ষা ।
কখন ইনবক্সে আসবে এক না-পড়া বার্তা ।
বারংবার একই লেখা পড়া,
ক্লান্ত হয়েও সেই লেখার মধ্যে
অন্য কোন ইঙ্গিতের খোঁজে
আবার সে লেখায় ডুব ।

কেটে গেল দিনটা এভাবেই,
কিছু কিছু দিন বোধ হয় এভাবেই কাটে ।
কিন্তু সেসব দিনেই আবার ভয় নেমে আসে,
ভয়টা নিজেকেই, তাই বোধ হয় চিন্তাও বেশি ।

নিজেকে যতটা চিনেছি,
তাতে নিজের কাছে নিজের অচেনা হতে,
সময় বেশি তো লাগে না ।
তবুও ইচ্ছে করে আশায় থাকতে -
সেই ভয়, সেই সংশয়,
হয়তো যাবে ধুয়ে-মুছে,
তোরই আশ্বাসে, তোরই ভরসায়,
তোরই বিশ্বাসে, তোরই সাহসিকতায় ।

Friday, October 16, 2015

আনন্দের গন্ধ - The smell of joy

Edmonton, 16-Oct-2015 1:23  PM 

গত কয়েক বছরে এই সময়টা
মোটামুটি এরকমই ।
কিন্তু চারপাশের উত্তেজনা-টা
উপেক্ষা করতে পারি না ।
একটা আলাদা গন্ধ,
একটা আলাদা চিত্রকল্প আছে
এই সময়টার ।
অনেক ভেবে দেখেছি,
আমার এই সময়টাকে ভাললাগা,
সকলের ভালোলাগাতেই লুকনো ।
এত মানুষের একসাথে সুখী থাকা,
তাদের সমস্ত দুঃখ ভুলে,
জীবনের যন্ত্রণা ভুলে,
পরিশ্রমের ক্লান্তি ভুলে,
ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা ভুলে -
তাকে কুর্নিশ জানাতেই হয় ।

এই সময়টা মানে আমার কাছে,
একরাশ নস্টালজিয়া ।
সেগুলোর কিছু কিছুতে ডুবে থাকতে বেশ লাগে,
আবার কিছু কিছু খুব আকর্ষণীয় নয় ।

খুব ছোটবেলায় গাড়ি ভাড়া হত,
সারাদিন হত ঘোরাঘুরি,
সাথে থাকত বাড়ির বড়রা,
রেস্টুরেন্টে মোগলাই-ও মনে পড়ে ।

একটু বড় হতে বন্ধুদের সাথে হেঁটে ঘোরা,
কল্লোলিনীকে চেনার সেই শুরু,
ভীষণ ভিতর থেকে, গভীরভাবে ।
রাতের শহরকে মায়াবী হতে দেখাও শুরু হল,
কখনও গাড়ির কাঁচের ভিতর থেকে,
কখনও অচেনা টেম্পোর পিছনে খোলা, দমকা হাওয়ায় ।

পরে হাত ধরে ঘুরেছি,
তখন এক দায়িত্ববোধ যেমন অনুভব করেছি,
তেমনি একরাশ মানুষের সামনে,
ঘনিষ্ঠতার পরশও ভাল লেগেছে ।

কিন্তু এসবের মাঝেও,
আমার কাছে যা সব থেকে প্রিয়,
সেটা ওই মেঠো গন্ধের,
আপাত জাঁকজমকহীন আড়ম্বরটাই ।
কিছু খারাপ মুহূর্ত থাকলেও,
আন্তরিকতা, একাকীত্বের মিশেলে
তা বোধ হয় তুলনারহিত ।
একটা বিকেলের বৈঠকি-সম আড্ডা,
মায়ের সাথে মামার আর আমার গান,
রাতে বড়দের তাস খেলা,
এবং পরের বছরগুলিতে আমাদের সেখানে যোগদান,
অন্ধকার রাস্তা পেরিয়ে আলোর মণ্ডপে পৌঁছানো, 
দুপুরে সকলে একসাথে টেবিলে, এবং
বড় মামার সেই সময় ফিরে আসা,
অন্য গ্রামে ভ্যানে করে যাওয়া, আর
যাওয়ার মাঝে জোনাকির আওয়াজের সাথে,
জেনেরেটরের শব্দের এক মেলবন্ধন -
নাহ, আমার কাছে আনন্দ এই,
তার গন্ধও এই ।

আমার জীবনে পুজো হয়ত বড় কিছু নয়,
কিন্তু তার এই গন্ধগুলো,
আর তার সাথে জড়িয়ে থাকা মুহূর্তের আনন্দগুলো,
এগুলোই হয়ত বলে যায়,
ফিরতে আমাকে হবেই । 

Friday, October 09, 2015

শ্রেয়ক ১ - The Masculine Betterment 1

Edmonton, 9-Oct-2015 5:49  PM 


ছেলেটার পাড়ায় নামডাক ছিল ।
আমরা তাকে শ্রেয়ক বলতাম ।
পাড়ার চারপাশের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়
তাঁকে ভালবাসা আর সম্মান - দুই-ই দিত ।
তবে সেটা ছেলেটার ভাল করেছিল না খারাপ,
তা বোধ হয় সময়ই বলবে !

ছেলেটা বাইরে একদিন এক নীল গাছ দেখল ।
আগে সে কোনদিন দেখেনি গাছ ।
অবাক হল, কিন্তু মেনে নিল,
গাছ নীল-ই হয় ।
পড়াশোনার সূত্রে সে গোবরডাঙ্গায় এল,
এখানে আবার গাছের নতুন এক রঙ দেখল - গোলাপি ।
সে ভাবল, গাছ বুঝি দুই প্রকারের ।
এতদিনে সে বড় হয়েছে, তার মন পরিণত,
সে মন নিয়ে, নতুন কিছু মেনে নেওয়া বড় কঠিন ।

একদিন তার বন্ধুরা তাকে নিয়ে বেড়াতে গেল,
সেখানে আবার এক নতুন রঙের গাছ পেল সে।
তার বন্ধুরা বলল, "দেখ কি সুন্দর লাল রঙের দেখতে",
শ্রেয়ক তা মানতে চায় না ।
নাহ, এ গাছ গোলাপি তার কাছে ।
তার মনের জানলাগুলো যে সব বন্ধ ।

এরপরে সে বাড়ি ফিরে কবিতা লিখছিল,
উদাস হয়ে জানালার দিকে তাকিয়ে ।
হঠাৎ দুরে দেখতে পেল এক সবুজ রঙের গাছ ।
বুঝতে পারল রঙ-টা সবুজ ।
মন মানছে, কিন্তু তার মস্তিষ্ক মানতে পারছে না।
সে ভাবছে গাছের রঙ নীল,
কারণ তার অভিধানে গাছের তো দুই প্রকার !

এই গল্পকবিতা অসম্পূর্ণ,
হয়ত শ্রেয়ক কোনদিনও বুঝবে যে,
তাদের পৃথিবীতে প্রত্যেক গাছই আলাদা,
অথবা হয়ত সম্পূর্ণ সুস্থ দুটি চোখ নিয়েও,
শ্রেয়কের অন্ধত্ব-দশা চলতেই থাকবে ।
গাছেদের আক্ষেপ নিজেদের কাছে 
তারা তাদের রঙ মেলে,
উদ্ভাসিত হতে পারল না শ্রেয়কের মত মানুষের কাছে।
তবে গাছেদের রঙ তো প্রকাশে,
প্রকাশের উপলব্ধিতে নয় - এটাই তাদের বাঁচার রসদ ।


একা থাকা - Living Alone

Edmonton, 9-Oct-2015 5:26 PM 

কাকে বলে একা থাকা ?
কাকে বলে দোকা ?
তোমার বাড়ির জানালায় 
যদি আমার মন পড়ে' থাকে,
তোমারই অজান্তে,
তুমি কি তবে পারবে জানতে,
তুমি একা না আমি ?

তোমার ওপর একটা পর্দা,
আমার ওপর অন্য রঙ -
দুটো আচ্ছাদন কি পেরনো সহজ এতই ?
আমার স্বচ্ছতা হয়ত প্রকাশ পেত,
তোমারই আন্তরিকতায় ।
কিন্তু সব সম্ভাবনা তো বাস্তব হয় না,
কল্পনা তো আরই নয় ।

তুমি করে যেও অভিনয়,
পর্দার ওপার থেকে,
যতদিন না কোন রক্তমাংসের নায়ক,
তোমাকে উদ্ধার করছে ।
আমি আশা করবো সে সময় দীর্ঘায়িত হবে না,
কারণ তোমার অস্বস্তি, কষ্ট -
তা তুমি যতই আড়াল করো -
এগুলো তো প্রশমিত হবে ।
ওষুধ না হয় না-ই বা হলাম,
প্রার্থনাই সই ।

উষ্ণতাই শ্রেয়

Edmonton, 21-Sep-2015 4:15 PM 

শীতলতা এখন অভ্যেস,
আলাদা করে প্রভাব ফেলে না ।
তবু আমার দেহ-মন তো উষ্ণ পরিবেশেরই !
এক পরিপাটি উষ্ণতা দেখেও 
কি তবে তার কাছে আমার ধরা দেওয়া উচিত নয়, 
স্রেফ নতুন, শীতল অভ্যেসের বশে ? 
জানি, এই নতুন অভ্যেসের জন্যই 
হয়ত উষ্ণতা আমাকে আপন করবে না । 
হয়ত দেহ মেনে নেবে না, 
হয়ত মনের অসুখ হবে, 
হয়ত অনেক বিপত্তি আসবে । 
তবে সেই সব হাজারও বিপন্নতা পেরিয়ে 
যদি সেই আবহাওয়ার সাথে অন্তরলীন হওয়া যায়, 
সেটাই তো জীবনের সার্থকতা । 
তাই অপেক্ষাতে থাকাই তবু শ্রেয় | 
উষ্ণ আবেশের বশবর্তী হওয়ার আকাঙ্খাটা-টুকু রাখা যায়। 
যদি কখনো উষ্ণতার 
একটুকরো শীতল পৃথিবীর খোঁজ পড়ে !