Friday, May 08, 2020

শিল্পকলা নিয়ে নোটস - ৫

জানালা দিয়ে তাকালে এখন নীল আকাশে পেঁজা তুলো দেখা যাচ্ছে, রোদ ঝকঝকে চারপাশে বাংলার শরতের ছায়া। তবে বাইরে বেরোনো গেলে কম তাপমাত্রা আর আরামদায়ক ঠান্ডা বাতাস পেতাম। কিন্তু বাইরে বেরোনোর উপায় না থাকায়, বড় জানলাটা দিয়ে মেঘগুলোর দিকে তাকিয়ে সময় কাটানো যায়, তখন রোদ্দুর আলতো করে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে গায়ে। মানুষের ছোঁয়া বহুদিন পাওয়া হয়ে ওঠে না। অন্য কারোর সরাসরি দৃষ্টিও আমার ওপর পড়েনি বহুদিন, তাই ভাবি, মেঘগুলোই বিভিন্ন রূপ নিয়ে আমাকে দেখে উধাও হয়ে যায়। ওরা কি বলতে চাইছে বুঝতে পারিনা, ভীষণ রকম নীরব। ওদের গতিও ভীষণ মন্থর। আমিও নীরব চোখে চেয়ে থাকি, নীরবতার ভাষায় আমরা কথা বলি। এটা হয়তো কোনো ক্রিয়েটিভ প্রসেস নয়, কিন্তু আমাদের এই যোগাযোগে সৃজন আছে, বহুদূরের বন্ধন তৈরী করা আছে। এই মেঘটাই তো উড়ে উড়ে অন্য কোনো মানুষকেও আমার সাথে বেঁধে ফেলছে। এই সৃষ্টিতে, এই বন্ধনে, এই কথোপকথনে কোনো ব্যাকরণ নেই, কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। 

অথচ চারিদিকের শিল্পে শুধুই যেন প্রাতিষ্ঠানিকতা, মাঝে মাঝে খুব ক্লান্ত লাগে। শিল্প বিষয়টার মধ্যে যে স্বতঃস্ফূর্ততা, কোথায় যেন তা ভীষণরকম ভাবে হাঁসফাঁস করতে থাকে। কিছুদিন আগের সত্যজিৎ-এর জন্মদিন উদযাপনে আর তারপরের রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপনে বারবার সেই প্রাতিষ্ঠানিকতার আড়ম্বর। প্রাতিষ্ঠানিকতা শব্দতে স্বততঃই একটা নেতিবাচক ধারণা আছে। কিন্তু একটা প্রতিষ্ঠান বেশ কিছু সংখ্যক সমমনস্ক মানুষকে কাছাকাছি আসার সুযোগ করে দেয়। সেটা শুধু যে সেই মানুষদের মধ্যে অন্তরঙ্গতা তৈরী করে তা নয়, সেটা একটা শিল্পচর্চার প্ল্যাটফর্ম তৈরী করে, একটা ফ্রেমওয়ার্ক তৈরী হয়। কিন্তু সমস্যার শুরুও হয় ঠিক সেখান থেকেই। 

সেই ফ্রেমওয়ার্ক এবং প্ল্যাটফর্মের অনুরাগীরা তাঁদের প্রতিষ্ঠানের প্রতি বেশি যত্নবান হতে গিয়ে রক্ষণশীল হয়ে পড়েন। তার থেকেই ধীরে ধীরে জন্ম নেয় আত্মম্ভরিতা, এলিটিসম এবং কোথাও গিয়ে এনটাইটেলমেন্ট। শিল্প তার বিবর্তনের স্বাভাবিক ছন্দ হারিয়ে ফেলে, বিবর্তনের শিল্পীদের একঘরে করে দেওয়া হয়, জর্জ বিশ্বাসের "ব্রাত্যজনের রুদ্ধসঙ্গীত" লিখতে হয়। যে কোন প্রতিষ্ঠানের যে প্রকৃত ভালো দিকগুলো, যার কারণে কোনো প্রতিষ্ঠান "প্রতিষ্ঠান" হয়ে ওঠে, তা কোথায় যেন হারিয়ে যেতে থাকে। আমরা ভুলে যেতে থাকি, আসলে এসব প্রতিষ্ঠান তো স্রেফ একেকটা "tag", এর থেকে বেশি তো কিছু নয়। কোনো "জাতে" ওঠার একটা রাস্তা মাত্র। আসল বিষয়টা হল তো সৃষ্টিটা, তার ভালো-খারাপ দুইই থাকে। প্রাতিষ্ঠানিকতা তার বিশালত্বের নেশায় খারাপ দিকগুলো ছুঁড়ে ফেলতে থাকে বিস্মৃতিতে, পড়ে থাকে শুধু একটা ঝাঁ-চকচকে bubble। 

শুধু শিল্পে তো নয়, এই প্রতিষ্ঠানের আমদানি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, স্কুল-কলেজ-অফিস। অথচ আমরা যদি পারতাম নিজেদের গর্বটাকে একটু সরিয়ে রাখতে, তাহলে প্রতিষ্ঠান শুধুই অন্তরঙ্গতার জায়গা থাকতে পারতো। কোনো প্রতিষ্ঠানই নিজের চারিধারে অহং-এর বেড়াজাল তৈরী করতে পারতো না। শিল্পের ক্ষেত্রে বিশেষ করে তা তৈরী করতো স্বচ্ছ নদীর মতো বহমানতা। সেই নদীতে সাদা মেঘের ছায়া পড়তো, যে মেঘেরা নতুন রূপে উড়ে যেত নতুন নতুন মানুষের কাছে, অদৃশ্য বন্ধনে আমরা নিজেদের বেঁধে নিতাম।

Monday, April 20, 2020

শিল্পকলা নিয়ে নোটস - ৪ | Notes on Arts - 4

শিল্পের উৎস নিয়ে ভাবনার কথা হয়েছিল। সেই উৎস বা অনুপ্রেরণায়, শিল্পকে প্রাথমিকভাবে মানুষের অনুভূতির প্রকাশ হিসেবেই দেখা যায়। এই ফর্মে শিল্প বাস্তবতা, সমাজ, সময় কোনোকিছুকেই তোয়াক্কা না করতে পারে। অথচ এই সমাজ ও সময়েই তো শিল্পের অবস্থান, তাই তাদের প্রভাব শিল্পের ওপর পড়েই। এবং বিপরীতে সমাজ ও সময়কে শিল্পের পরোক্ষে কিছু ফিরিয়ে দেওয়া থাকে, কিছুটা প্রভাবিত করা থাকে। এই ধরনের এক দেওয়া-নেওয়ার মধ্যে দিয়ে শিল্প, সমাজ ও সময়ের একটা সিম্বায়োটিক সম্পর্ক তৈরি হয়।

খুব ইন্টারেস্টিংলি, সমাজের ঐতিহাসিক যাত্রা যখন প্রগতির দিকে, শিল্পের একটা বড় অংশ সমাজ এবং সময়ের অন্ধকার দিকগুলোর ওপর ফোকাস করে। এটা হয়তো causation, correlation নয়। হয়তো সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশগুলোর বেদনাদায়ক বিবরণী আমাদের সেই খারাপ দিকগুলো সম্পর্কে বেশি করে অবহিত করে রাখতে চায়। আমাদের মনে সচেতনতা, সতর্কতা যোগায়, সাবধানবাণী দিয়ে যায়। শিল্প যেন প্রানবন্তভাবে বুঝিয়ে দিতে চায় সমাজের সেই দুরুহ অবস্থার তীব্রতা ঠিক কতটা। যাতে সমাজ সেই অন্ধকার সময়গুলোতে ফিরে না গিয়ে উজ্জ্বলতার দিকে যাত্রা করে, প্রগতিশীল হয়।

কিন্তু দুঃখ দুর্দশা তো আমাদের মনে হতাশা, সংশয়, ভয় ডেকে এনে। এরকম কঠিন সময়ে, শিল্প কি বিলাসিতা নয়! এখানে মূলত দুটো যুক্তি পাচ্ছি। প্রথমত, শিল্পীর অর্থনৈতিক অবস্থান বা শ্রেণী। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, দুর্দশার প্রাথমিক আঁচ থেকে শিল্পীরা একটা দূরত্বে থেকে শুধুমাত্র পর্যবেক্ষণ করে তাঁদের শিল্পরচনা করে থাকেন। এখানে আমরা সত্যজিৎ থেকে সলিল চৌধুরী, অনেককেই পাবো, যারা প্রধানত মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত পরিবারের মানুষ। দ্বিতীয়ত, শিল্পীর দুরবস্থাই কখনো কখনো শিল্প হয়ে কথা বলে। সেখানে দুর্দশাটার সরাসরি প্রকাশ হয় শিল্পে। এবং অনেক সময় তা শিল্পের সাধারণ পরিশীলন, আঙ্গিককে ভেঙে দেয়। যেমন আমরা ঋত্বিক ঘটকের ভারতভাগ নিয়ে সিনেমাগুলোতে ধারাবাহিক ভাবে দেখি।

এই দুটো যুক্তি ছাড়াও একটি তৃতীয় বক্তব্য রাখা যায়। যে কোন কঠিন সময়েরই একটা প্রাথমিক অভিঘাত থাকে। অযাচিত বা অপ্রত্যাশিত কোনো ঘটনা ঘটে যাওয়ার দরুন, মানুষের বিচলিত হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। যেমন কাছের কোন মানুষের মৃত্যু বা এমনকি এই অকস্মাৎ করোনাভাইরাস নামক মহামারী নেমে আসা। ঘটনার প্রাথমিক চমক কেটে যাওয়ার পরই হয়ত আমরা মানসিকভাবে এমন এক জায়গায় আসতে পারি, যেখানে নতুন শিল্প তৈরী হতে পারে।
(চলবে)

Sunday, April 05, 2020

আমাদের আসা-যাওয়ার-মাঝে

এক প্রবল ঝড় এসে সব ওলোটপালোট করে দেওয়ার পরে, চারিদিক ভীষণ শান্ত হয়ে উঠছিল, যেমনটা হয়ে থাকে। কিন্তু মনের ভিতরে তখনও ছিল উথালপাথাল করে দেওয়া শূন্যতা। পৃথিবীটাকে চিনতেই যেন খুব অসুবিধে হচ্ছিল। হয়তো তার সাথে নিজের ভিতরের খানিকটাও হারিয়ে গিয়েছিলো।

গল্পটা এরকম চলতে পারতো, এবং ধীরে ধীরে এই অচেনা পরিচয়ই হয়তো আপন হয়ে উঠতো। কিন্তু গল্প আর জীবন তো এক নয়, তা আমরা জানি। কিন্তু যেটা আমরা অনেকসময় ভুলে যাই - জীবন গল্পের থেকেও বেশি আদরের। সে যেমন সজোরে ধাক্কা দেয়, তেমনি সর্বাত্মক ভালোবাসায় সেই জীবনেরই প্রেমে পড়তে শেখায়।

তাই জীবন তৈরী করলো নতুন আখ্যান - ঝড়ের শেষে যে গুমোট আবহাওয়া ছিল, সেই মেঘ কেটে গেল, সূর্য ঝলমল করে উঠলো, গাছের পাতায় দেখা গেল অকাল সবুজ, প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে পাখিরা তাদের বাসা ছেড়ে বেরিয়ে পড়লো ভীষণ কলরবে, সব ক্লীবতা দূর হয়ে গেল, আর শুরু হল নতুন চর্যা। সেই চর্যায় না থাকলো কোনো চাপানো বাঁধন, না কোনো আড়াল, না কোনো মলিনতা, না কোনো অন্ধকার। 

অথচ বন্ধন তো তৈরী হল, যে বন্ধন পশমের আদর লাগিয়ে নিজেকে হারিয়ে যেতে দেয় না। যে বন্ধন কোন নিয়মের বিধিনিষেধ না মেনেই ভীষণ জোরালো হয়। যে বন্ধন দূরত্বকে অবজ্ঞা করে অনায়াস পারদর্শিতায়। সেই বন্ধন অচিরেই এনে দেয় আরাম, অভ্যাস, দৈনন্দিন রুটিন। কিন্তু সেই প্রাত্যহিকতা এতটাই সহজাত, যে তা একেবারেই উহ্য। তার অনুভব আছে, উচ্চারণ নেই।

সেই অনুভবে, এক প্রান্তের সকালের রোদে অন্য প্রান্তের বিকেলের পাখিদের ঘরে ফেরার ডাক শোনা যায়। তারপর কিছুটা সময়কে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে আদানপ্রদান করে নেওয়া, অন্তরঙ্গতা। একটু বাদে দৈনন্দিন কাজের ব্যস্ততায় ডুব দেওয়া। তবু "মাঝদুপুরে হঠাৎ সেদিন আচমকা সব পড়লো মনে", এবং সেই বিষাদকে নদীর ধারে হাঁটতে গিয়ে জলের সাথে ভাগ করে নেওয়া। এরপরে কাজ শেষে, আবারো কিছু সময়ের ভাব, কিছু ভাবনার প্রকাশ। এই আসা যাওয়ার মাঝে যে সময়টুকু পড়ে থাকে, সেখানেই তৈরী হয়ে গেল কত রঙিন স্বপ্ন। মেঘের গায়ে নকশা আঁকা হল কত কল্পনার। জলের বুকে খেলে গেল কত তরঙ্গ, ভরসার দেওয়াল পেল হৃদয়ের প্রত্যেক নিলয়-অলিন্দ, সব জটিল সমীকরণ সমাধান খুঁজে পেল। বোধ হয় এরই অপেক্ষা ছিল চিরটাকাল, বহুযুগ, শুধু সমাপতন হয়নি সময়ের। কিন্তু ভাবনা, চিন্তা ও সর্বোপরি হৃদয়ের সমাপতনের কাছে সময়ের হার তো ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই অপেক্ষার শেষেই শুরু নতুন সময়ের, নতুন পথচলার।

Sunday, March 01, 2020

প্রযুক্তি ও ভবিষ্যৎ ৩ (মেশিন লার্নিং ও অর্থনীতি)

গ্লাসনস্ত আর পেরেস্ত্রয়িকার কথা আমরা অনেকেই মোটামুটি জানি - সোভিয়েত ভেঙে যাওয়ার প্রধান দুটি কারন বলা হয় থাকে এ দু'টিকে। বাংলায় এদের নিয়ে অনেক ঠাট্টা, মস্করা, এমনকি গান পর্যন্ত লেখা হয়েছে - "...এমনকি পেরেস্ত্রয়িকাও থাকেনা" - চন্দ্রবিন্দুর "মঙ্গল গ্রহে" গানে। কিন্তু সোভিয়েত ভেঙে যাওয়ার পিছনে অর্থনৈতিক কারণগুলো স্রেফ এই দুটি বিষয় ঘিরেই নয়। কয়েকটি মূল কারণ স্বরূপ বলা হয় - মিলিটারিতে অতিরিক্ত খরচ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েতের নিজের অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় অক্ষত এবং শক্তিশালী আমেরিকার বিনিয়োগের সাথে অসম লড়াই, ইত্যাদি। আর একটি কারণও ভীষণ জরুরি, গুরুত্বপূর্ণ এবং অনেকাংশে মুখ্য - যেটা কিনা "সেন্ট্রাল প্ল্যানিং"-এর ব্যর্থতা।

সেন্ট্রাল প্ল্যানিং - যার অর্থ রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা। সোভিয়েতের "ঘোষিত কম্যুনিস্ট" বা "স্টেট্ ক্যাপিটালিজম"-এর মডেলে সেন্ট্রাল প্ল্যানিং-এর মস্ত বড় ভূমিকা ছিল। রাষ্ট্র ঠিক করতো কোথায় কত পরিমান খাদ্য এবং দ্রব্য সামগ্রী উৎপাদন হবে ও সরবরাহ হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই ব্যবস্থা টিকে থাকতে পারেনি, এর কারণ যেসব আধিকারিকরা ডিমান্ড এবং সাপ্লাইয়ের এই তথ্য রাষ্ট্রর কাছে পাঠাতেন - তাতে গলদ থাকতো। তাঁরা নিজেদের গা বাঁচাবার জন্য অনেকসময় ভুল তথ্য নথিভুক্ত করতেন। এছাড়া মূল অভিযোগ করা হয় যে, রাষ্ট্রের পক্ষে অনুমান করা সম্ভব নয় - কোন্ কোন্ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কাঁচামাল কোথায় পাঠানো উচিত, বা কোনো সামগ্রী কতটা উৎপাদন করা উচিত। রাষ্ট্র এতসব তথ্য জোগাড় করতে এবং অনুমান করতে অক্ষম। তাই রাষ্ট্রের পক্ষে এরকম কেন্দ্রীয়ভাবে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করাটা অবাস্তব। মার্কেট বা বাজারের হাতেই অর্থনীতির এই কাজটাকে ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে দাবী করা হয়। 

এবার আমরা চলে আসি আজকের যুগে, এখনকার বাস্তবে। এখন আমাদের কাছে ডিজিটাল মিডিয়ামের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা এবং সেই data analyze করা খুবই সহজ থেকে সহজতর হতে শুরু করেছে। মূলত কম্পিউটারের বিশাল উন্নতির কারণে এই কাজ খুব সহজেই করে ফেলা যাচ্ছে। ফলে প্রত্যন্ত গ্রামে কতটা ধান উৎপাদন বা আলু চাষ করলে, বড় বড় শহরের খাবারের চাহিদা মেটানো যাবে, সে সম্পর্কে অনেক বেশি সঠিকভাবে অনুমান করা সম্ভব হচ্ছে। শুধু তাই নয়, মানুষ ঠিক কোন ধরণের খাবার, সামগ্রী বেশি কিনছেন, চাইছেন, সে সম্পর্কেও আমরা খুব সহজে তথ্য পেয়ে যাচ্ছি আজকের ডিজিটাল যুগের কারণে। আপনি বিগ বাজার থেকে যখন মাসে ১ কেজি ডাল বা ৫ কেজি চাল কিনছেন, তখন তা একটি সার্ভারে ক্রমাগত নথিভুক্ত হয়ে যাচ্ছে। সেই তথ্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছানোও যাচ্ছে খুব দ্রুত। তবে এর পরেও অনেক কিছুই শুধুমাত্র মানুষের খাতা-পেনের ক্যালকুলেশনে বলে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই এখানেই সহায়তা করতে পারে মেশিন লার্নিং। মেশিন লার্নিং-এর সাহায্যে মানুষের কেনাকাটার তথ্য থেকে অনুমান করা যেতে পারে জনগণের চাহিদার প্রকৃতি কিরকম, তাদের জিনিসপত্র কেনার প্যাটার্ন কিরকম। তারপর আমরা সেরকম দ্রব্যসামগ্রী তৈরী করার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারি। 

এটা যে আমি কোনো বায়বীয় তত্ত্ব বলছি, তা নয়। ওপরে বলা আমার বক্তব্যের বাস্তব প্রয়োগ করে চলেছে, আমার-আপনার চেনা একটি জনপ্রিয় কোম্পানি। Amazon। Amazon-এর একটি বিজনেস মডেলের ব্যাপারে সে জন্য জানা দরকার। Amazon-এ বিভিন্ন বিক্রেতা তাঁদের জিনিস বিক্রি করে থাকেন। ধরুন একটা ফ্রিজ। বিভিন্ন বিক্রেতা বিভিন্ন ধরণের ফ্রিজ বিক্রি করে থাকেন Amazon.com-এ। মানুষ তাঁদের চাহিদা মতো বিভিন্ন ধরণের ফ্রিজ কিনে থাকেন। কোনোটায় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের উপায় থাকে, কোনোটায় ফ্রিজারটা বড় হয় - এরকম হাজারো প্যারামিটার থাকে। কোন্ ক্রেতারা কোন্ ফ্রিজ কিনছেন, কোন্ ধরণের বৈশিষ্ট্যের ফ্রিজ তাঁদের ভালো লাগছে, তাঁরা ফ্রিজটিকে কেনার আগে কতক্ষন ধরে পরীক্ষা করছেন - Amazon এইসব তথ্যই জোগাড় করতে থাকে। এরপরে মোটামুটি সর্বাধিক ক্রেতাদের চাহিদা মতো একটি ফ্রিজ Amazon নিজেই বানানো শুরু করে। এই নতুন ফ্রিজটিকে তারা নিজেদের একটি ব্র্যান্ড দেয় - AmazonBasics. এরপর Amazon এই নতুন ফ্রিজটিকে অন্য সব বিক্রেতাদের থেকে একটু কম দামে বেচতে শুরু করে। সাথে সাথেই Amazon সম্ভাব্য ক্রেতাদের AmazonBasics-এর তৈরী করা সামগ্রীই কেনার জন্য রেকমেন্ড করতে শুরু করে তাদের প্ল্যাটফর্মে। আর যেহেতু Amazon-এর কাছে তাঁদের ক্রেতাদের পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে ডেটা আগে থেকেই আছে, তাই তারা খুব সহজে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছেও যেতে পারে, মেশিন লার্নিং-কে কাজে লাগিয়ে। ফলত অন্য সব বিক্রেতা বাজার থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হয়, কারণ তাঁরা Amazon-এর সাথে প্রতিযোগিতায় পেরে ওঠে না। Amazon খুব সহজেই ক্রেতাদের মনের মতো সামগ্রী, তাঁদের সূক্ষ বিশ্লেষণের মাধ্যমে, ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা পায়। এভাবে বাজারে তারা একরকম মনোপলি তৈরি করে।

এই একই মডেল যদি আমরা এনে ফেলি সেন্ট্রাল প্ল্যানিং-এ, তাহলে দেখবো তা Amazon-এর strategy-এর থেকে খুব একটা আলাদা তা নয়। Amazon তার সফল মডেলের জেরে বিশ্বের ট্রিলিয়ন ডলার কোম্পানি। কিন্তু আমাজন একটি প্রাইভেট কোম্পানি, ফলে তার লভ্যাংশ শুধু কোম্পানির মালিকেরাই পেয়ে থাকেন - প্রধানত জেফ বেজোস। অথচ সেন্ট্রাল প্ল্যানিং-এ যদি আমরা মেশিন লার্নিং-এর মডেল আনতে পারি, তাহলে সেটা একটা বৃহত্তর সমাজের স্বার্থের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। তখন আমাদের খাদ্য, ব্যবহারযোগ্য সামগ্রীর অহেতুক অপচয় বন্ধ হতে পারে। আমাদের খুব দক্ষ প্রোডাকশন সিস্টেম মেশিন লার্নিং-এর সাহায্যে যতটা দরকার ঠিক ততটাই দ্রব্য উৎপাদনের উপযুক্ত হতে পারে। শুধু তাই নয়, আমরা যদি আবহাওয়ার কথাও এখানে চিন্তা করি, তাহলে কিভাবে প্রকৃতিকে নষ্ট না করে দ্রব্য উৎপাদন করা যেতে পারে, সেদিকেও মেশিন লার্নিং যথেষ্ট সাহায্য করতে পারে। যেমন করে আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে মেশিন লার্নিং এবং অন্যান্য উন্নত প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে Bill and Melinda Gates Foundation পোলিও এবং অন্য রোগ দূরীকরণের কাজ সাফল্যের সাথে করেছেন। তাই আমাদের কাছে জনসাধারণের উন্নতির উদাহরণও যে নেই তা নয়। 

বর্তমানে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কগুলি বিভিন্ন ইকোনোমিক ডেটা সংগ্রহ করে' দেশীয় ব্যাঙ্কগুলির বেস ইন্টারেস্ট রেট নির্ধারণ করে। চীন একধাপ এগিয়ে তাদের দারিদ্র্য দূর করার জন্য মেশিন লার্নিংয়ের ব্যবহার করা শুরু করেছে, খাদ্য সরবরাহ এবং উৎপাদনের জন্য। আমাদের লক্ষ্য থাকা উচিত যে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যেসব দেশগুলি চলছে, সেগুলির সরকারও ক্রমশ যাতে জনগণের জন্য টেকনোলজির ব্যবহার করা শুরু করে। যে প্রযুক্তির ব্যবহার আমরা প্রতিরক্ষা এবং মিলিটারি ক্ষেত্রে খুব সহজেই করে থাকি, সেই প্রযুক্তিই দ্রুত সাধারণ জনগণের অর্থনৈতিক এবং দৈনন্দিন স্বার্থে ব্যবহার করা দরকার। চিলির প্রেসিডেন্ট সালভাদোর আলেন্দের আমলে Project Cybersyn নামক এক পরিকল্পনায় অনেকটা এই কাজটাই করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তখন প্রযুক্তি এবং ডেটা সংগ্রহ আজকের স্তরে না পৌঁছানোয়, সেই কাজ পুরোপুরি সফল হয়নি। আজ আমাদের প্রযুক্তি এবং সমাজ এই পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য মূলত প্রস্তুত। বামপন্থী দলগুলোর এই ধারণাগুলোকে আবার একবার তাই ফিরে দেখা দরকার। যেভাবে প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজ মেশিন লার্নিংকে কাজে লাগাচ্ছে, সেভাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রও যদি মেশিন লার্নিং-এর সাহায্য নিয়ে ইকোনোমিক প্ল্যানিং-এর দিকে এগোতে পারে, তবে বাস্তব জীবনে টেকনোলজির এক বিরাট প্রয়োগ ও ফলস্বরূপে সাধারণের উন্নতির প্রভূত সম্ভাবনা আছে।

Wednesday, January 29, 2020

বোকার মতো - Like a fool

Boston, 29-Jan-2020, 10:49 PM

একটা ভীষণ বোকার মতো,
ছবি আঁকার ইচ্ছে হতো,
মেঘের গায়ে নক্সা যেমন
তেমন ঝাউ পাতার মতো,
পালক ঘেরা পেলব মতো,
সূর্যাস্তের গোলাপী মতো,
সবার মনের খুব গভীরে
গোপন ভালো কায়ার মতো।

একটা ভীষণ বোকার মতোই
মনের কথা জমা হতো,
দুঃখ হতো, কষ্ট হতো,
গলায় দলা পাকিয়ে যেত,
হাঁটতে হাঁটতে কান্না পেত
রাত্তিরে ঘুম ভাঙিয়ে দিত,
"আমার কাজের মাঝে মাঝে"
পংক্তি এসে আঘাত দিত।

একটা ভীষণ বোকার তখন,
স্মৃতিচারণ ইচ্ছে হতো,
আঙুলে হাত ইচ্ছে হতো,
চিরকালীন থাকার মতো,
তোমার সাথে আমার মতো,
দুই শরীরে একের মতো,
পায়রা ওড়ার শব্দ হতো,
মনের ক্ষত মিলিয়ে যেত,
ভীষণ ভীষণ বোকার মতো।

Tuesday, December 31, 2019

২০১৯

একেকটা বছর আসে, যারা অন্ধকারকে চেনায়, যারা রজনীগন্ধার গন্ধে ভাসায়, টেনে হিঁচড়ে নিচে নামাতে থাকে। কিন্তু বরাবর দেখেছি, খারাপ এই সময়গুলোকে মিথ্যে করে দিয়ে, আশার বাতাস আদরের প্রলেপ জমাতে আসে। যখন অসময় ঠেলতে ঠেলতে আলোকবিহীন খাদের কিনারায় নিয়ে চলে যাচ্ছিল, তখনই অপ্রত্যাশিতভাবে সুসময় হাত বাড়িয়ে ভালোবাসায় বিশ্বাস ফিরিয়ে দেয়। চারিদিকে সেসময় ঘৃণা, অবসাদ, ধর্ষণ। কিন্তু তার মাঝেই উঠছে অন্য ঢেউ, অন্য অকাসিও-কর্টেজ, অন্য ছাত্র-জনগন জমায়েত। এই সামাজিক পরিসর পেরিয়ে, ব্যক্তিগত পরিশ্রম পেয়ে যাচ্ছে সামান্য স্বীকৃতি, বহু টালবাহানার পরে। ব্যক্তিগত ভরসা তার নতুন শ্রী খুঁজে পাচ্ছে। পৃথিবী নতুন উদ্যমে পাড়ি দিচ্ছে তার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার কক্ষপথে, আবারও।

Tuesday, December 24, 2019

রাতশেষে - After the night

Kolkata, 24-Dec-2019

শহরে তখন অশান্তি আর নেই,
কুয়াশা ঢেকেছে প্রথম ভোরের আলো।
চাদর জড়ানো আদুরে উষ্ণতায়
রাতে জেগে থাকা তারাদের ঘুম এলো।

নিভু নিভু সব ফুটপাথে জ্বলা বাতি,
আকাশে ভাসছে স্নিগ্ধ রোদের ভৈরোঁ,
মোমের মতন শীতল বাতাস যেন
নিদ্রাহীনের ক্লান্তি মোছানো শৈশব।

এমন শহরে আশঙ্কা বেমানান,
তবু সন্দেহ প্রত্যেক কলিজায়।  
সংশয়গুলো ঠিকানা খুঁজতে গিয়ে
রিখটার স্কেলে হৃদয় মাপতে চায়।

চারপাশে যত পতাকা স্লোগানে ভয়
শেষ হয়ে থাক পাখির মতো বাঁচা।
আমার কাঁধে তোমার মাথা রেখে 
বুনতে থাকি নতুন প্রেমের খাঁচা।

Friday, December 20, 2019

Internet blockade in Howrah

After three days of Internet blockade by the state -

It feels like times have figuratively gone back. It's not too bad, since people anyway like to reminisce nostalgic past. I'm back at my pre-secondary and -higher-secondary days, listening to Radio (See Sinchan and Ashish, Radio is important). The added bonus now is the lack of television, because we disconnected our TV cable a few years back, thinking too progressively at that point of time. It's an interesting time to live.

Some people are comparing the current situation with the situation under the Fuhrer. This kind of simplification sometimes dilutes the significance of the concerning situation, by exaggerating it too far. But, even if we agree that the recent days in India has similarity to the Third Reich, there is a stark difference.

When Hitler was building his torturous empire, the economy was actually on the rise. It was recovering from the disaster of the World War I. It was a fully state-sponsored development for the private enterprises, with heavy spending on military, motorways and other public infrastructures. It also improved the unemployment by a good margin. All these apparent economic progress helped the Nazi agenda of ethnic cleansing by showing a false development and promising a bright future to the German people. Finally, the tragedy of mass killings was carried out.

The amazing achievement of the Modi government is that it is able to propagate its extremist, religious, conservative propaganda, in spite of an ongoing economic recession. People are jobless; common food prices are going up; economy is going downturn for quite a while. However, people are more engrossed into the non-economic issues. They are conveniently confronted with new social concerns which had nothing much to do with fundamental progress or economic growth.

As we discover similarities of our current times to the Nazi state, we should also recognize the difference. As the old man said, "history repeats itself, first as tragedy, then as farce." We have possibly gone back, but with a new vigor of ignorance. We are living our own farce. The technological advancement helped it by both providing right information faster and also spreading misinformation quicker. But it is clear from the recent surge of protests all across India and some parts of the world that people ultimately sift through the garbage and side with progressive, humane cause. The state consequently abides by its mass.

Thursday, August 22, 2019

শিল্পকলা নিয়ে নোটস - ৩ | Notes on Arts - 3

ক্লাসিকাল ইকোনোমিক্স তত্ত্বে শিল্প একটি কমোডিটি ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু আদপে শিল্প তো শুধু তাই হতে পারেনা, শিল্পের একটা দ্রব্য ধর্ম ছাড়া তাতে পুঞ্জীভূত থাকছে আমাদের অনুভূতি, অভিজ্ঞতা জাতীয় আপাতভাবে বায়বীয় কিছু বস্তু। আবার আমাদের চিন্তা করার ক্ষমতা শিল্পকে আহরণ করতে পারারও উপযোগী করে তুলছে। তাই শিল্প শুধু সৃষ্টিকর্তার হয়ে থাকছে না, তা দর্শক, শ্রোতা বা পাঠকের হয়ে উঠছে। মানে শিল্প সৃষ্টির বিপরীত প্রান্তে যারা শিল্পকে ভোগ করছে, শিল্প তাদের মাধ্যমে নতুন মাত্রা পাচ্ছে। সেদিক থেকে দেখলে ক্লাসিকাল ইকোনমিক্সের তত্ত্ব ভুল কিছু নয় - শিল্পের একটা উৎপাদন (production) এবং ব্যবহার (consumption) আছে। এই অর্থনীতিকে ভিত্তি করে ভাবতে শুরু করলে আমরা শিল্পের সামাজিক বাস্তবতার আলোচনায় ঢুকে পড়তে পারি - যেটা আপাতত করতে চাইছি না। আমরা শিল্পের বিমূর্ত দিকটার গভীরে ঢুকবো।

শিল্পের এই যে দ্বিমাত্রিক ক্ষমতা - উৎপাদন এবং আহরণ - মানবপ্রজাতির এক স্বতন্ত্র উদ্ভাবন। দুটো কাজেই মানুষ কিছু আনন্দ, দুঃখ বা অন্য অনুভূতি পেয়ে থাকে। সুতরাং, শিল্পের দু' প্রান্তেই মানুষের কিছু পাওয়ার আছে। অবশ্য সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নভাবে দেখলে শিল্পীর তার শিল্পের ব্যবহার সম্পর্কে ভাবিত থাকার কোনো কারণ নেই। কিন্তু শিল্পের এই যে বহুমাত্রিক ভূমিকা, তা মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রাণী বিকশিত করতে পেরেছে কি না, সে আমার জানা নেই। মানুষের চিন্তা এবং বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা শিল্পকে মানুষের জীবনে এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে। সাথে বিজ্ঞানের অগ্রগতি নতুন ধরণের শিল্পমাধ্যম তৈরী করছে - যেমন সিনেমা, ফটোগ্রাফি, ইত্যাদি। 

আবার বিজ্ঞানের এই প্রগতির মাধ্যমেই এখন আমরা আমাদের এই বিশ্লেষণী ক্ষমতা অনু-পরমাণুর মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছি। যেখানে বহু ইলেকট্রন দৌড়াদৌড়ি করে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে বিশ্লেষণের ক্ষমতা পাচ্ছে। যদিও এই প্রযুক্তি এখনও শিশুসুলভ, কিন্তু আমরা সহজেই মেশিনপ্রদত্ত গভীর বিশ্লেষণের অনুমান করতে পারছি। এই ধরনের সন্ধিক্ষণে আমি মানবসৃষ্ট শিল্পের আরো গোড়ায়, আরো ফান্ডামেন্টাল-এ ঢুকতে চাইছি। আমি খুঁজে পেতে চাইছি সেই শিল্পমাধ্যমকে যার জন্য মানুষ শুধু নিজেই মাধ্যম, তার আর অন্য কোন মাধ্যম লাগছে না। মানে ধরা যাক, আঁকতে গেলে লাগছে কাগজ, পাথর, রং, তুলি বা পেন্সিল; সাহিত্যে কালি ও কাগজ। সিনেমা বানাতে ক্যামেরা। কিন্তু এমন কোন শিল্প তো আছে, যেখানে মানুষ আর প্রকৃতিপ্রদত্ত শক্তিই শিল্প তৈরী করছে। 

এখানে আমরা একাধারে পাচ্ছি গানকে। এখানে সংগীতের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে শব্দ নামক শক্তি, যা রূপান্তরিত হচ্ছে অন্য কোনো শক্তি থেকে। এই শব্দশক্তিই অন্য মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে শিল্প হয়ে এবং মানুষ তা আহরণ করছে। সংগীতের বিমূর্ততা গানের মাধ্যমে এভাবেই মানুষের কাছে  ভীষণ বাস্তব হয়ে উঠছে, খুব গভীরে থেকে। 

অন্যপাশে আমরা পাচ্ছি নাচকে - যার মাধ্যম মূলত মানুষের পার্থিব অবস্থান ও রূপ এবং আলোকশক্তি। আলোর মাধ্যমে নাচ পৌঁছে যাচ্ছে অন্য মানুষের উপলব্ধিতে। সুতরাং গান এবং নাচকে আমরা শিল্পের একদম ফান্ডামেন্টালে পেয়ে যাচ্ছি। এছাড়া অন্য কিছু আছে কিনা, আপাতত মনে পড়ছে না। তবে গানের সাথে মানুষের এই যে আত্মিক এবং আধ্যাত্মিক যোগ - এটা নিজে যেমন অনুভব করেছি, তেমনি এটাও বুঝতে পারছি যে গান এভাবেই ভীষণ বিমূর্ত হয়েও মানবসত্ত্বার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে। নাচ ছাড়া, গান শিল্পমাধ্যমগুলোর মধ্যে একটা স্বকীয় জায়গা করে নিচ্ছে - এভাবে আমি আমার সংগীতপ্রীতির একটা ব্যাখ্যা তৈরী করছি।

Thursday, July 18, 2019

Chernobyl Long Rambling

In our childhood, Russian Fairy Tales or “Rushdesher Upokotha” was fairly popular in Bengal. I loved reading those short stories. There used to be a moral lesson at the end of those stories. “Chernobyl”, a tv-series by HBO, is not a fable but a harsh reality which seemed to make us confront the morality of truth and lie. More precisely, it questions a government’s truthfulness and moral responsibilities to its citizens.

“Chernobyl” shows a sequence of events in the disastrous accident in the nuclear plant at Chernobyl, located in former USSR, currently in Ukraine. It dramatizes the account of the event for theatrical presentation, but also does not fall short of scientific detailing. It eventually becomes a pretty grueling experience of five episodes in the tv-series.

Hierarchical System

A recurrent theme in Chernobyl was the Soviet government’s lies that led to the disaster. One main reason behind the lies was the huge pressure on the lower level officials to show progress in their jobs in front of the higher authorities. Soviet Russia (USSR) had a pretty bureaucratic, vertical hierarchical administrative system, just like it still exists in every other part of the world. The vertical hierarchy does not distribute the power of administration well among its officials. It creates enormous pressure in a chain of hierarchical levels. It also creates an unhealthy reward system. For example, Dyatlov, a chief-engineer at Chernobyl, had to conduct a nuclear test, that eventually led to the disaster, just to get his promotion. “Chernobyl” rightfully points out such problematic issues in our current bureaucratic system.

Rather, a flat hierarchy with more distributed ownership of work makes everyone more responsible. In such a system, the objective of a project becomes more important, rather than individual rewards. We can still have seniority and expertise but a more democratic administrative mechanism. For example, the professors in academic departments have more distributed and democratic composition, rather than hierarchical one. The responsibilities are distinguished but the power is democratized. It avoids a single point of failure, as it happened in Chernobyl. Having said that, there is an ongoing assault on the democratic fabric that existed in academia until recently.

Historical Context of Soviet “Lies

The other main reason behind the Soviet government’s denial of truth was fear. If you notice carefully, everyone in the administrative hierarchy was afraid of attack by some foreign bodies, especially the USA. The fear was not just by the higher officials, but also by the lower level workers. Most of them were also shameful to ask for global help because they had to portray themselves “strong”. All of these attitudes need to be seen with historical context.

We need to remember that USSR was formed by bringing down the cruel, monarchical Russian Czar empire. Until then, it was a fairly agro-based country before becoming industrialized just in a few decades. Soon after, USSR had to suffer the heaviest blows of Hitler and also World War II (WW2). In such an adverse historical pretext, USSR entered into Cold War with USA, ironically one of its allies in WW2.

As USA was largely unaffected by WW2, it started the diplomatic war from an advantageous position. In addition, USA gained a huge scientific upper hand, as many European Jew scientists fled to the other end of the Atlantic to save themselves from Hitler. In the other end, USSR with its abysmal condition after WW2, continued an unreasonable competition for decades. From such perspective, USSR really achieved a lot in that competition with respect to space technology and industrial output. They sent the first satellite to space, first animal, first man, first woman, etc. However, they could not beat USA’s historical benefits. USA’s economy was being strongly built because of the research and innovations by the large number of newly arrived scientists.

As USSR was falling behind, they tried to keep the costs of industrial productions down. It was also one of the reasons of the Chernobyl disaster, if you remember. Fear of the unknown, unreasonable pressure, lower funding cannot enable quality research. Eventually, Chernobyl marked the ending of the Cold War after which USSR disintegrated. In any way, an undemocratic administrative system with socialistic principles cannot survive as USSR also was not able to. However, USSR showed us a great potential. It can also be claimed that even Chernobyl, in spite of being a dystopian show, does bring out some bright optimism.

Glowing Positivity

I was attracted most by “Chernobyl”’s positiveness which trumps the pessimism that prevails most of the show. In the awake of such an unprecedented disaster, we could see that people from all walks of life came out for help. General public came to rescue even though they were not responsible for the accident. This attitude upholds the hypothesis that we can also bear the losses together in a society, if we can enjoy the profits together. The morality in USSR helped itself get out of such a catastrophe. This is where Chernobyl shines.

Accident vs. Crime

Chernobyl happened because of an accident. Dyatlov thought that there was a safety button which could hold the ongoing test. Although he had made his part of mistakes, but the disaster happened by accident not by someone’s intention. According to show “Chernobyl” (which is made by Americans), the nuclear accident had “four times power compared to the Hiroshima and Nagasaki nuclear bombs”. However, Soviet people were still able to restrain the effect of the disaster to a great extent. It was catastrophic but they were able to hold it off. They were only able to do that when all of them worked together towards a common goal.

Chernobyl’s reality and its minimal effect in today’s world put a relevant question in front of us about our current situation. And this concerns the current catastrophe that we are facing: the climate change. It is not an accident this time, because we all know what we are doing. The facts are in front of us. We are still progressing increasingly faster to the total extinction of human civilization on earth. Large industries, the owners of huge corporate companies, the economic and political system - all of them are knowingly moving towards the climate catastrophe for at least the past three decades. It is a crime against humanity, not an accident. Are we going to hold it off this time? or will we be in denial of truth? The Soviet people were able to resist a global disaster, will we be able to?