Thursday, September 29, 2016

বিদেশে থাকতে পুজো - Pujo while being abroad

গত কয়েক বছরে এই সময়টা মোটামুটি এরকমই। কিন্তু চারপাশের উত্তেজনা-টা উপেক্ষা করতে পারি না। একটা আলাদা গন্ধ, একটা আলাদা চিত্রকল্প আছে, এই সময়টার ।

অনেক ভেবে দেখেছি, আমার এই সময়টাকে ভাললাগা, সকলের ভালোলাগাতেই লুকানো। এতগুলো মানুষের একসাথে সুখী থাকা - তাদের সমস্ত দুঃখ ভুলে, জীবনের যন্ত্রণা ভুলে, পরিশ্রমের ক্লান্তি ভুলে, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা ভুলে - তাকে কুর্নিশ জানাতেই হয় ।

এই সময়টার মানে আমার কাছে - একরাশ নস্টালজিয়া। সেগুলোর কিছু কিছুতে ডুবে থাকতে যেমন বেশ লাগে, তেমনি কিছু কিছু আবার খুব আকর্ষণীয় নয়।

খুব ছোটবেলায় গাড়ি ভাড়া হত, সারাদিন হত ঘোরাঘুরি, সাথে থাকত বাড়ির বড়রা, রেস্টুরেন্টে মোগলাই-ও মনে পড়ে।
একটু বড় হতে বন্ধুদের সাথে হেঁটে ঘোরা, কল্লোলিনীকে চেনার সেই শুরু, নিজের মতো করে, ভীষণ ভিতর থেকে, গভীরভাবে। রাতের শহরকে মায়াবী হতে দেখাও শুরু হল, কখনও গাড়ির কাঁচের ভিতর থেকে, কখনও অচেনা টেম্পোর পিছনে খোলা, দমকা হাওয়ায়।

পরে নরম হাত ধরে ঘুরেছি, তখন এক অদ্ভূত দায়িত্ববোধ যেমন অনুভব করেছি, তেমনি প্রচুর মানুষের ভিড়ে ঘনিষ্ঠতার পরশ এক অন্যরকম ভাল লাগা দিয়েছে।

কিন্তু এসবের মাঝেও, আমার কাছে যা সব থেকে প্রিয়, সেটা ওই মেঠো গন্ধের, আপাত জাঁকজমকহীন আড়ম্বরটাই। কিছু খারাপ মুহূর্ত থাকলেও, আন্তরিকতা আর একাকীত্বের মিশেলে, এই অনুভূতি বোধ হয় তুলনারহিত।

একটা বিকেলের বৈঠকি-সম আড্ডা, মায়ের সাথে মামার আর আমার গান, রাতে বড়দের তাস খেলা, এবং পরের বছরগুলিতে আমাদের ধীরে ধীরে সেখানে যোগদান, অন্ধকার রাস্তা পেরিয়ে আলোর মণ্ডপে পৌঁছানো, দুপুরে সকলে একসাথে টেবিলে কতকটা এলাহী খাওয়াদাওয়া, অন্য গ্রামে ভ্যানে করে যাওয়া, আর যাওয়ার মাঝে জোনাকির আওয়াজের সাথে জেনেরেটরের শব্দের এক অম্লমধুর মেলবন্ধন - নাহ, আমার কাছে আনন্দ এই, তার গন্ধও এই ।
আমার জীবনে পুজো হয়ত বড় কিছু নয়, কিন্তু তার এই গন্ধগুলো, এই খুব সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো, তার সাথে জড়িয়ে থাকা মুহূর্তের আনন্দগুলো, এগুলোই হয়ত বলে যায়,

...
...
...

ফিরতে আমাকে হবেই।

মহালয়াটা কি টেকনিক্যালিটি মেনে নিয়ে আজ সন্ধ্যেবেলা এখন চালানো উচিত নাকি মনের শান্তনায় কাল ভোরে ? যদিও ওই কন্ঠ্যে যে কোনো সময়ই, যে কোনো জায়গায় শরৎ আর পুজোর আবির্ভাব হতে পারে...

No comments:

Post a Comment