ওভেনের কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই ফিসফিসিয়ে কানে কথা এলো। বাড়িতে কারো থাকার কথা নয়, মন দিয়ে শোনার চেষ্টা করলাম, কিন্তু তেমন কিছু শুনতে পেলাম না। সন্তর্পনে মাইক্রোওয়েভের কাছে যাচ্ছি, আবারো শুনি, কারা যেন কথা বলছে। একটু দাঁড়িয়ে মনোযোগ দিয়ে শুনে বুঝলাম, আসলে কারো স্মৃতিচারণ চলছে, ব্যস্ততার, নিয়মিত ব্যবহারের। তক্ষুনি অন্য ঘরে যাওয়ার করিডরে আলো জ্বলে উঠলো, একটা কোমলতা নিজস্ব এক ছন্দে হেঁটে আসছে। তাকে আসতে দেখে মনে শান্তি পায়, চারিদিকে এই তুমুল অস্থিরতার সময়তেও ছায়ার মত আরাম লাগে। কিন্তু সেই চলনও তো ছায়াই, ছায়ার মায়ায় মিলিয়ে যায়। চারিদিক তারপরে খালি, শূন্যতা, নিস্তব্ধতা। সারি সারি গাড়ি চলে যাওয়া বিকেলটা একদম নিশ্চুপ হয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে। কিচেন থেকে আর কোনো আওয়াজ শোনা যাচ্ছে না, ঘরের দরজায় কোনো ঠকঠক নেই। অথচ ঠান্ডা বাতাস বইছে, সমুদ্রের পারের বাতাস, সেই বাতাসের শব্দ এবার পরিষ্কার হচ্ছে। বাতাসও আরাম দিচ্ছে বটে, কিন্তু আন্তরিকতা নেই। ক্লান্তিময় স্বাচ্ছন্দ্য, কোথাও কোনো স্পর্শ নেই, একটুকু ছোঁয়া নেই। শুধু একজনকে একটা তিনতলা বাড়ির জানালায় চশমা পরে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। তার চোখ, মুখ, মুখের ভাব, ভাবনা - সব ঝাপসা।
No comments:
Post a Comment